git SATSANG

সৎসঙ্গ

জনকল্যাণমূলক ধর্মীয় আন্দোলন। পাবনা জেলার হিমাইতপুর গ্রামে এর কেন্দ্রীয় আশ্রম প্রতিষ্ঠিত। প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র(১৮৮৮-১৯৬৯)। হিমাইতপুর তাঁর জন্মভূমি এবং জীবনের ৫৮ বছরের কর্মভূমি। মানুষের মধ্যে প্রকৃত মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটাতে পারলেই তার যথার্থ কল্যান সাধন সম্ভব। এই অনুভব থেকেই আশৈশব মাতৃভক্ত এবং মানব প্রেমিক অনুকূলচন্দ্রের জীবনে সৎসঙ্গ আন্দোলনের সূত্রপাত।

 

‘সৎসঙ্গ’ নামে একটি সংগঠন পূর্ব থেকেই বিদ্যমান আছে উত্তর ভারতে আগ্রা শহরে ‘দয়াল বাগ’ নামক স্থানে। মধ্যযুগে উত্তর ভারতে নানক(১৪৬৯-১৫৮১), রামানন্দ(১৪০০-১৪৭০), দাদু(১৫৪৪-১৬০৩) প্রমূখ সাধকগণ যে বাহ্য আনুষ্ঠানিকতা বর্জিত অসাম্প্রদায়িক এবং মানবতাবাদী মরমীয়া ধর্ম সাধনার ধারা প্রবর্তন করেছিলেন ১৮শ-১৯শ শতাব্দীতে, সৃষ্ট আগ্রা দয়ালবাগ ‘সৎসঙ্গ’-এ তারই নব-রূপায়ন ঘটেছিল। এর প্রতিষ্ঠাতা স্বামীজি মহারাজের শিষ্য হুজুর মহারাজ হলেন শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের জননী মহিয়সী সাধিকা ‘মনমোহিনী’ দেবির গুরু। কৈশোরে আপন জননীর নিকটেই অনুকূলচন্দ্র মন্ত্রদীক্ষা লাভ করেন। কাজেই বলা যায়, শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র প্রবর্তিত ‘সৎসঙ্গ আন্দোলন’ বৈশিষ্ট্যে স্বতন্ত্র হলেও আগ্রা সৎসঙ্গের তার ঐতিহাসিক যোগসূত্র আছে। অনুকূলচন্দ্র  ‘সৎসঙ্গ’ এর সংজ্ঞা দিয়েছেনঃ ‘সৎ-এ সংযুক্তির সহিত তদগতিসম্পন্ন যারা-তারাই সৎসঙ্গী, আর, তাদের মিলন ক্ষেত্রই হল সৎসঙ্গ’। সৎসঙ্গ তাই জাতি, বর্ণ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল মানুষের মিলনক্ষেত্র।

 

‘সদগুরুর শরণাপন্ন হও, সৎনাম মনন কর, আর সৎসঙ্গের আশ্রয় নিয়ে তেমনি করেই চলতে থাক- আমি নিশ্চয় বলছি, তোমাকে তোমার উন্নয়নের জন্য ভাবতে হবে না’।– এই অনুকূল-বাণী সৎসঙ্গের অনুসারী সৎসঙ্গীদের চলার পথের চিরন্তনী প্রেরণা।

 

১৯২৫ সালে সঙ্ঘ নিবন্ধীকরণ বিধি অনুযায়ী  নিবন্ধীকৃত হয়ে ‘সৎসঙ্গ’ একটি সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। মনোমোহিনী দেবী হয়েছিলেন ‘সৎসঙ্গ পরিষদের’ প্রথম সভাপতি।

 

‘অন্যে বাঁচায় নিজে থাকে, ধর্ম বলে জানিস তাকে’। -এই অনুকূল-বাণীর আলোকে ধর্ম ও কর্মের অপূর্ব সমন্বয়ে হিমাইতপুরে সৎসঙ্গ আশ্রমে গড়ে উঠেছিল আদর্শ শিক্ষাকেন্দ্র তপোবন’ মনোমোহিনী কলেজ অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি’ বহুমুখী বিজ্ঞান গবেষণার জন্য ‘বিশ্ববিজ্ঞান কেন্দ্র’, ‘সৎসঙ্গ কেমিক্যাল ওয়ার্কস’, ‘মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ’, ‘সৎসঙ্গ প্রেস এন্ড পাবলিশিং হাউজ’, ‘সৎসঙ্গ দাতব্য চিকিৎসালয়’, ‘কলাকেন্দ্র’, ‘মাতৃবিদ্যালয়’, ‘কুটির শিল্প কেন্দ্র’, ‘সৎসঙ্গ কৃষি খামার’, সর্বসাধারণের জন্য ভোজনাগার ‘আনন্দবাজার’ প্রভৃতি।

 

দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক প্রমূখ দেশবরেণ্য নেতৃবৃন্দসহ দেশ ও বিদেশের অগণিত গুণিজন ‘সৎসঙ্গ’ পরিদর্শন করে এর অসাম্প্রদায়িক ধর্মকেন্দ্রিক মানব সেবামূলক কর্মকাণ্ডের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

 

১৯৪৬ এর ১লা সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যগত কারণে সৎসঙ্গ-প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ভারতের বিহার রাজ্যের দেওঘর গমন করেন। উপমহাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তিনি মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে পারেন নি। ফলে হিমাইতপুরস্থ ‘সৎসঙ্গ’ আশ্রম বিলুপ্ত-প্রায় হয়ে পড়ে।

 

দেওঘরের বুকেও গড়ে উঠেছে বিশাল সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠান এবং তার কার্যধারা ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র ভারতবর্ষে এবং বহির্ভারতেও। হিমাইতপুরের আশ্রমভূমি ১৯৫২ সালে পূর্বপাকিস্তান সরকার হুকুম দখল করে মানসিক হাসপাতাল স্থাপন করে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে হিমাইতপুরে হিমাইতপুরের মূল আশ্রম সংলগ্ন ভুমিতে সৎসঙ্গ আশ্রম পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পূর্বের ন্যায় এখন সঙ্ঘের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা প্রভৃতি জেলাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে সৎসঙ্ঘের শাখা আশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং পাশ্চাত্যেও এর কর্মধারা প্রসারিত। বাংলাদেশে কয়েক লক্ষ সহ সারা বিশ্বে সৎসঙ্গীর সংখ্যা কয়েক কোটি। হিমাইতপুর তাদের কাছে পরমতীর্থ। শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থানসহ বিশেষ স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান ও ভবনসমূহ সংরক্ষণ সকলের প্রাণের দাবী।

 


 

SATSANG

 

A socio-religious movement, central Asram at Himaitpur, Pabna, founded by SriSriThakur AnukulChandra(1888-1969). Himaitpur is the birth place of AnukulChandra and he lived there for long 58 years. Since his boyhood out of devotion to his mother, humanist AnukulChandra began his Satsang movement.

 

Another organization, names satsang was established before-hand at Daiyalbag, in the city of Agra, Northern India. In the middle age, the non-communal, non-ceremonial, humanitarian and mystic spiritual cult which was preached by the North-Indian saints like Nanaka(1469-1581), Ramananda(1400-1470), Kabir(1398-1448), Dadoo(1544-1603) etc., was renovated in the ‘Satsang’ at Dayalbag, Agra, by its founder Swamiji Maharaj(18th-19th AD). His disciple Hujur Maharaj was the Guru of Manomohini Devi, the Mother of AnukulChandra. Hence, it is clear that the Satsang movement of AnukulChandra although different in characteristics was historically related to Agra Satsang.

 

Anukul-Chandra defined Satsang : Those who are associated with ‘Sat’(The Supreme Being) and move accordingly, are ‘Satsangees’, and their unity is ‘Satsang’. So, Satsang is the place of union of all people irrespective of caste and creed.

 

Anukul-Message : Be initiated by the Sat-Guru(Spiritual-Guide), meditate the Holy name and move accordingly, taking shelter of Satsang. I speak it with surity that yourself development will be automatic,- is the eternal inspiration of Satsangees.

 

Satsang was registered as an organization under society Registration Act, in the year 1925 and Manonohini Devi was the first President of ‘Satsang-Council’.

 

‘Self-living with active help for other’s living is Dharma’- in the light of Anukul-Chandra’s above message Himaitpur Satsang Asram, became the combining place of ‘Dharma’ and Karma’. There were the following institutions in the Satsang Asram: ‘Tapovan’(ideal educational institution), ‘Manmohini college of science and Technology’, ‘Viswa Bijnan Kendra(World Science Laboratory), ‘Satsang Chemical works’, ‘Mechanical Engineering Workshop’, ‘Satsang press and Publishing House,’ ‘Satsang Charitable Dispensary, ‘Art Centre’, Maternity Centre’, ‘Cottage Industrial Centre’, ‘Satsang Agricultural Farm’, ‘Anandabazar(Common Kitchen)’.

 

The renowned political leaders like DeshaBandhu Chittaranjan, Mahatma Gandhi, Netaji Subhas Chandra Bose, A. K. Fazlul Haque visited ‘Satsang’ and highly praised of its activity.

 

Due to ill health AnukulChandra, the founder of Satsang, left Himaitpur for Deoghar Bihar for a change and hi could not return to his motherland due to changed political situation. Satsang Asram was established in Deoghar also, and its activity was spread out all-over India and outside.

 

Satsang Asram of Himaitpur was acquired by the Pakistan Government in 1952 for establishing Mental Hospital. After wards, in 1968 Satsang Asram(SriSriThakur AnukulChandra Satsang) has been re-established on the adjacent lands of the original Asram at Himaitpur. It has its branches in Dhaka, Chittagong, Mymensing, Sylhet, Tangail, Netrakona, Khulna and almost in other Districts in Bangladesh.

 
"প্রতি বছর ন্যায্য সামর্থ্য সঙ্কুলান থাকিলে অন্ততঃপক্ষে একবার তোমার আদর্শ ঈপ্সিত প্রিয়পরমের জন্মস্থানে
সশরীরী নতজানু উৎফুল্ল অভিবাদন দিতে কিছুতেই তাচ্ছিল্য করিও না।" -- শ্রীশ্রীঠাকুর।
Copyright © 2014 srisrithakuranukulchandrasatsang.com All Rights Reserved.